জাদুকাটা নদী- সুনামগঞ্জ
দুই পাহাড়ের মাঝখান দিয়ে নেমে এসেছে এ নদী। যেমন অদ্ভুত তার সৌন্দর্য, তেমন অদ্ভুত তার নাম। বিমুগ্ধ করার মতো মায়াবী I জাদুকাটা নদী যে কাউকে জাদু করতে যথেষ্ট।
গভীরতা কম। পানি এতটাই স্বচ্ছ যে, নিচের বালুকণা পর্যন্ত স্পষ্ট দেখা যায়। নদীর একপাশে বিস্তীর্ণ বালুচর, অন্যপাশে সবুজ পাহাড়ের হাতছানি। কে-না চায় এমন এক পরিবেশে নিজেকে একটু হারিয়ে ফেলতে!
সুনামগঞ্জ জেলা শহর থেকে দূরত্ব ২০ কিলোমিটার। নদী পর্যন্ত যেতে ভালো কোনো রাস্তা নেই। জাদুকাটায় যেতে কমপক্ষে একটু নদী ও কিছুটা মোটরবাইকে ভ্রমণ না করে উপায় নেই। তবে সব কষ্ট মাড়িয়ে যখন পায়ের নিচে এ নদীর ঠান্ডা জলের পরশ আর মাথার ওপরে পাহাড় এসে পড়বে, তখন অনুভূতি অন্য রকম।
পাহাড়ের পিঠ বেয়ে বের হয়ে বাংলাদেশে এসেছে জাদুকাটা নদী। দেখে মনে হবে, নদীর উৎসমুখে দুই পাশ থেকে পাহাড় ঝুলে আছে। পেছনে আরো একটি পাহাড়ের দেখা মিলবে সেখানে।
পূর্বদিকে শাহ আরেফিনের (রহ.) আস্তানা ও লাউড়েরগড় গ্রাম। সেই গ্রামের দক্ষিণ কোণের নদীতীরে রয়েছে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান। প্রতিবছর চৈত্র মাসে প্রায় একই সময়ে শাহ আরেফিনের আস্তানায় ওরস ও জাদুকাটা নদীতীরে পুণ্যস্নান হয়। দুই উৎসব ঘিরে সে সময় নদীতীরে বসে দুই ধর্মের মানুষের মিলনমেলা। হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে নদীর গা ঘেঁষে।
একসময় এই নদীর তীরেই ছিল প্রাচীন রাজ্য লাউড়ের রাজধানী। সময়ের পরিক্রমায় সেখানে এখন রাজ্য নেই, নেই রাজধানীও। প্রাচীন সেই রাজ্যের নামের সঙ্গে মিলিয়ে এখনো গ্রামটির নাম ‘লাউড়েরগড়’।
No comments